কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার সকালে উপজেলার ঘোলপাশা ইউনিয়নের রাঙ্গামাটিয়া গ্রামে বসতঘরের সামনে থেকে ৫৫ বছর বয়সী তৈয়ব আলী নামের ওই ব্যক্তির মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। তিনি দীর্ঘদিন ধরে শ^শুড় বাড়িতে বসবাস করছিলেন। পুলিশ জানায়, মরদেহটি ঝুলন্ত অবস্থায় ছিল।
তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন আহমেদ। তিনি জানান, প্রাথমিকভাবে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়েছে এবং ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। তদন্তের পর মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে।
নিহত তৈয়ব আলীর স্ত্রী রহিমা বেগম জানান, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি তার ছেলে আবদুল করিম জনি পাশ^বর্তী নোয়াপাড়া গ্রামের মাদরাসা ছাত্রী মাইমুনা সুলতানা লুভনাকে নিয়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় লুভনার পরিবার থানায় অভিযোগ দায়ের করে এবং দ্রুত তাদের মেয়ে ফিরিয়ে না দিলে হত্যাসহ গ্রাম ছাড়ার হুমকি দেয়। এতে তৈয়ব আলী মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন।
রহিমা বেগম বলেন, “মঙ্গলবার সকালে তৈয়ব আলী বাড়ির বাইরে বাগানে ছিলেন। রাতে তাকে বাড়ির পাশে ফিরে আসে, কিন্তু কিছু সময় পর আবার বেরিয়ে যান। আমি ঘরে তালা লাগিয়ে অন্য বাড়িতে গিয়ে ঘুমাই। সকালে বাড়িতে এসে আশেপাশে তাকে খুঁজতে গিয়ে দেখি, আম গাছের ডালের সাথে গামছা পেছানো অবস্থায় তৈয়ব আলীর লাশ ঝুলছে।” তার চিৎকারে স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে জড়ো হয়ে পুলিশকে খবর দেয়।
মেয়ের মা মনোয়ারা বেগম জানান, তার মেয়ে লুভনাকে নিয়ে তৈয়ব আলীর ছেলে আবদুল করিম পালিয়ে যাওয়ার পর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। তবে, তিনি দাবি করেন যে, তাদের পক্ষ থেকে কাউকে হুমকি ধমকি দেওয়া হয়নি।
গ্রামের লোকজনের বরাত দিয়ে জানা গেছে, তৈয়ব আলী মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন এবং সম্প্রতি তার সাথে পুলিশও আচরণ করেছিল। গ্রামের এক বাসিন্দা জানান, “গত কয়েকদিন ধরে তৈয়ব আলী গ্রামে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরাফেরা করছিলেন এবং আজকের এই ঘটনা সবাইকে স্তব্ধ করেছে। এটা আত্মহত্যা, নাকি হত্যার ঘটনা—তা তদন্তে পরিষ্কার হবে।”
এদিকে, চৌদ্দগ্রাম থানার ওসি মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, “তৈয়ব আলীর মরদেহ উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে।”