কুমিল্লায় আলুর বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা, তবে দাম পতনের শঙ্কা

চান্দিনা
Spread the love

কৃষি নির্ভর কুমিল্লায় এবার আলুর বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। তবে মৌসুমের শুরুতেই আলুর দরপতনে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। আলু চাষে দীর্ঘ বছরের লোকসান কাটিয়ে এবার ভালো ফলন আশা করলেও, বাজারে আগাম আলু প্রবাহের কারণে তাঁদের উদ্বেগ বাড়ছে। এ পরিস্থিতিতে কৃষকরা সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বিদেশে আলু রপ্তানীর সুযোগ বাড়ানোর পাশাপাশি কোল্ড স্টোরেজের ভাড়া কমিয়ে কৃষকদের পাশে দাঁড়ানোর দাবি জানিয়েছেন।

এ বছর কুমিল্লার ১৭টি উপজেলায় মোট ৯,০৬১ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। এর মধ্যে দাউদকান্দি উপজেলায় সর্বাধিক ৩,৪৯৭ হেক্টর জমিতে আলু চাষ করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আলু চাষে রোগ বালাই কম ছিল এবং কৃষকরা বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখছেন। তবে, উত্তর বঙ্গের আলু বাজারে আসার সাথে সাথে কুমিল্লার বাজারে দাম দ্রুত পড়ে গেছে, যা কৃষকদের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার আলু চাষী আকতার হোসেন জানান, “এ বছর আমি ৫ একর জমিতে আলু চাষ করেছি। বীজ ও শ্রমিক খরচ বেড়েছে, তবে ফলন ভালো হওয়ার আশা ছিল। কিন্তু এখন বাজারের অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে খরচও উঠবে না।” দেবীদ্বার উপজেলার কৃষক নূরে আলম বলেন, “বর্তমানে আলুর দাম খুব কমে গেছে। যদি বাজারের এই অবস্থা চলতে থাকে, তাহলে লোকসান নিশ্চিত।”

এদিকে, কৃষকরা আশঙ্কা করছেন যে, কোল্ড স্টোরেজের সুযোগ কম হওয়ায় তাদের আলু সঠিক সময়ে সংরক্ষণ করা সম্ভব হবে না, ফলে দাম আরও কমে যেতে পারে। স্থানীয় কোল্ড স্টোরেজ মালিকদের দাবি, “১ মার্চ থেকে কোল্ড স্টোরেজ চালু হবে এবং মার্চের পর কুমিল্লা অঞ্চলের আলু সংগ্রহ করা যাবে, তখন কেবল উত্তর বঙ্গের আলুর উপর নির্ভরশীল থাকতে হবে না।”

কৃষকদের এ উদ্বেগের বিষয়ে কুমিল্লা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আইউব মাহমুদ বলেন, “যদি আগামী ১৫ দিনের মধ্যে বৃষ্টি না হয়, তবে কৃষকরা তাদের আলু বাড়িতে মজুদ করে ধীর স্বস্তিতে বিক্রি করতে পারবেন। তবে, যদি বৃষ্টি হয় এবং কোল্ড স্টোরেজে সংরক্ষণ করতে না পারেন, তবে কৃষকদের জন্য সমস্যার সৃষ্টি হবে।”

এ অবস্থায় কৃষকরা সরকারের কাছে দ্রুত পদক্ষেপ আশা করছেন, যাতে তাদের এই সংকট কাটিয়ে উঠতে সহায়তা করা হয়।